আমাদের অনুমতি

এমআরএইচ টিভি হাতিয়া ডট কমে প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

শিরোনাম বিজ্ঞাপন উইজেট

WELLCOME TO MRHTVHATIYA.BLOGSPOT.COM HATIYA NOAKHALI 💖🤼‍♂️💖💖🤼‍♂️

আইন, বিচার ও ক্রসফায়ার" ‌চৌধুরী তৌ‌হিদুর রহমান তুষার

 "আইন, বিচার ও ক্রসফায়ার"

‌চৌধুরী তৌ‌হিদুর রহমান তুষার


========================>ধারাবাহিক কলাম, পর্ব-০১

আইন ও বিচার একটা আপে‌ক্ষিক বিষয়। 

কোন দে‌শে যেটা আইন,অন্য কোন দে‌শে সেটা বেআইন। মানুষ প্রথম জীব‌নে উলঙ্গ অবস্থায় বন-জঙ্গল ও গুহায় যাযাব‌রের মত জীবন যাপন করত। মানুষ বেঁ‌চে থাকার তা‌গি‌দে দুর্ধর্ষ পশু ও প্র‌তিপ‌ক্ষ গো‌ত্রের আক্রম‌নের ভ‌য়ে এক‌ত্রে বসবাস শুরু ক‌রে। শ‌ক্তিমত্তা প্রদর্শন কর‌তঃ গোত্র প্রধান নি‌র্ণিত হত এবং তার আদেশ নি‌র্দেশই ছিল ঐ গো‌ত্রের আইন। এ আই‌নের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল, উক্ত গো‌ত্রের খাদ্য ও সম্প‌দের নিরাপত্তা বিধান।পারবর্তী‌তে লি‌খিত আই‌নের যে ইতিহাস পাওয়া যায়, তা খৃঃপূর্ব ৪৫১ অ‌ব্দে। 

রোমান নাগ‌রিক‌দের উচ্চ শ্রেণী‌র নাম ছিল প্লে‌বিয়ান ও নিম্ন শ্রেণীর নাম ছিল প্যাট্রী‌শিয়ান। কোন লি‌খিত আইন না থাকায় জীব‌নের বি‌ভিন্ন ক্ষে‌ত্রে নীম্ন‌ শ্রেণীর নাগ‌রি‌করা আই‌নের অ‌ধিকার থে‌কে ব‌ঞ্চিত হত। কারন, যারা বিচার কর‌তেন তারা সক‌লে ছিলেন উচ্চ‌শ্রেণীর নাগ‌রিক। 

তারা লি‌খিত আইন না থাকার সু‌যো‌গে বি‌ভিন্ন ব্যাখ্যা দি‌য়ে রায় উচ্চ‌শ্রেণীর প‌ক্ষে দি‌তেন। যা কম‌বেশী এখনও বিদ্যমান এবং‌ কেয়ামত পর্যন্ত চল‌বে।‌ রোমান নিম্ন‌ শ্রেণীর নাগ‌রি‌করা বি‌ভিন্ন সময় এজন্য অসন্তষ প্রকাশ সহ উচ্চ‌ শ্রেণীর নাগ‌রিক‌দের সা‌থে দ্বন্দ ও সংঘ‌র্ষে লিপ্ত হত। এজন্য শান্তি শৃংখলার সা‌থে রাজ্য চালা‌নো অসম্ভব হ‌য়ে গে‌লে রোমান শাসকরা দে‌শের দশজন আইনজ্ঞ‌কে উচ্চ ও‌ নিম্ন সকল শ্রেণীর নাগ‌রিক আই‌নের চো‌খে সমান ও সম অ‌ধিকার প্রদা‌নের উদ্দে‌শ্যে লি‌খিত আইন প্রন‌য়ো‌নের দা‌য়িত্ব দেন। 

তারা প্রথ‌মে দশ‌টি ও প‌রে দু‌টি স‌র্বো‌মোট ১২টি বিধান উল্লেখ পূর্বক এক‌টি সং‌হিতা সৃ‌ষ্টি ক‌রেন। উক্ত ১২টি বিধান রোমান সম্রাটরা ১২টি ব্রো‌ঞ্জের ফল‌কের উপর লি‌খে সর্বত্র প্রচার ক‌রেন।

যা আইনাঙ্গ‌নে ঐতিহা‌সিক"The Twelve Tables" ( Latin Lex XII Tabularum) না‌মে সর্বজন বি‌দিত।

আইন আস‌লে কি?

আইন হল আইনসভার অ‌ধিকাংশ সদ‌স্যের ইচ্ছা, যা সক‌ল নাগ‌রি‌কের উপর বাধ্যকর। ধরা যাক আইন সভায় একটা বিল আস‌লো দাড়ি রাখ‌লে প্র‌ত্যেক নাগ‌রিক‌কে মা‌সে ১০০ টাকা জ‌রিমারা দি‌তে হ‌বে। আইন সভার ৪৯% সদস্য এ বি‌লের চরম বি‌রো‌ধীতা করল তবুও ৫১% মেজ‌রি‌টিতে আইন‌টি পাশ হ‌য়ে গেল। আইন পা‌শের পর যে ৪৯% মানুষ এর চরম বি‌রো‌ধীতা ক‌রে‌ছিল তা‌দেরও দাড়ি রাখ‌তে হ‌লে জ‌রিমানা দি‌তে হ‌বে। য‌দি না দেন, ত‌বে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা‌কে স‌জ্জিত ক‌রে রাখা হ‌য়ে‌ছে আপনা‌কে ধ‌রে এনে বিচা‌রের মু‌খোমু‌খি করার জন্য। অার বিচারালয় আছে আপনা‌কেজেল ও জ‌রিমানা করার জন্য। 

তাহ‌লে দেখা যা‌চ্ছে যে আইন হল মেজ‌রি‌টির মতামত জোরপূর্বক মাইন‌রি‌টি‌কে মানতে বাধ্য করা। আর য‌দি রাজা বাদশার দেশ হয়, ত‌বে রাজা বা বাদশার একার ফরমান সকল নাগ‌রিক মান‌তে বাধ্য। আর এক ধর‌নের আইন আছে যা‌কে দে‌শে প‌রিচালনার মূল আইন বলা হয়, যা আমরা সং‌বিধান হিসা‌বে চি‌নি, তা মূলত গৃ‌হিত হয় রাষ্ট্র গঠ‌নের সময়। রাষ্ট্র‌টি কি ভা‌বে প‌রিচা‌লিত হ‌বে তা সং‌বিধা‌নে উল্লেখ থা‌কে। 

সাংবিধা‌নিক আইন পা‌শের বি‌শেষ বিধান অ‌ছে। কোন দে‌শে আইনসভার মোট সদ‌স্যের তিন ভা‌গের দুই ভাগ বা চার ভা‌গের তিন ভাগ বা পাচ ভা‌গের চার ভাগ সদ‌স্যের সমর্থ‌নে সাং‌বিধা‌নিক আইন গ্রহন বা বর্জন করা হয়। 

ত‌বে এখা‌নেও একটা বিষয় আছে, য‌দি সং‌বিধা‌নের মূল চ‌রিত্র প‌রিবর্তন কর‌তে হয় সে‌ক্ষে‌ত্রে শুধু আইনসভার সদস্য‌দের ভো‌টে পাশ হ‌বেনা, তা পুনরায় অনুসমর্থ‌নের জন্য সরাস‌রি জনগ‌নের কা‌ছে গণ ভো‌টে দি‌তে হয়। কারন, জনগণই রাষ্ট্রের মা‌লিক। জনগণ য‌দি সি‌ম্পিল মেজ‌রি‌টি‌তে তা সমর্থন ক‌রে তাহ‌লে তা আই‌নে প‌রিনত হয়। আমা‌দের দে‌শে অবশ্য গণ‌ভো‌টের বিধানটি বাদ দেয়া হ‌য়ে‌ছে। 

তার মা‌নেই জনগণ বিরাট‌ এক‌টি অ‌ধিকার হা‌রি‌য়ে ফে‌লে‌ছে, যা আমরা বুঝ‌তেই পা‌রি‌নি। 'আই‌নের শাসন' কথা‌টি প্রায়ই শুনা যায়। সব সময় আই‌নের শাসন কিন্তুু মঙ্গলকর নয়। যে ক্ষে‌ত্রে আইনটাই ভাল না, সে আই‌নের শাসন জনগ‌ণের কোন মঙ্গল ব‌য়ে আনে না। মে জন্য আর এক‌টি কথা প্রায়ই উচ্চা‌রিত হয় 'কা‌লো আইন'। কাল আইনও আইন, ত‌বে তা দেশ ও জা‌তির জন্য কোন মঙ্গল ব‌য়ে আনে না। আমার ম‌তে বর্তমা‌নে সব‌চে‌য়ে ক‌ঠোর আই‌নের শাসন জা‌রি আ‌ছে উত্তর কো‌রিয়ায় কিম জং উনের দে‌শে। যে দে‌শের অ‌ধিকাংশ আইনই কা‌লো অাইন। তাহ‌লে কি আমরা সব‌চে‌য়ে ভাল দেশ কি উত্তর কো‌রিয়া‌কে বল‌বো, না নিশ্চই নয়। 

রাষ্ট্র‌ য‌দি শ্বাসক‌কে প্র‌টেক্ট করার জন্য আইন ক‌রে ও তা প্র‌য়োগ ক‌রে সে রাষ্ট্র আধু‌নিক কল্যাণকর রাষ্ট্র ন‌হে ত‌বে যে দেশ নাগ‌রি‌কের মঙ্গ‌লের কথা চিন্তা ক‌রে আইন ক‌রে ও তার প্র‌য়োগ ক‌রে সে রাষ্ট্রই কল্যাণকর রাষ্ট্র যা দে‌শের সক‌লের কাম্য।

পৃ‌থিবীখ্যাত গ্রিক দার্শ‌নিক স‌ক্রে‌টি‌সের ৭০ বছ‌রের বৃদ্ধ বয়‌সে খৃঃপূর্ব ৩৯৯ অ‌ব্দে বিচার ও মৃতু্্যদন্ড দেয়া হ‌য়ে‌ছিল প্রচ‌লিত ধারনা থে‌কে স‌রে যেয়ে নতুন জ্ঞান বিজ্ঞান ও দার্শ‌নিক চিন্তাধারা প্রচা‌রের জন্য। প্রাচীন গ্রি‌সে সব‌কিছুই দেব দেবীর প্রভা‌বে হয় ব‌লে বিশ্বাস করা হত।‌ যেমন ফসল ভাল খারা‌পের জন্য ফস‌লের দেবী'দে‌মে‌তে'র ভু‌মিকা আছে, একইভা‌বে ভু‌মিক‌ম্প দেবতা পে‌সেইডন,উপ‌রের বাতা‌সের দেবতা ইথার, বজ্রপাত ও বৃ‌ষ্টির দেবতা জিউস, বিচা‌রের দেবী থে‌মিস সহ সব‌কিছু দেব দেবী‌দের প্রভা‌বে হয় ম‌র্মে গ্রি‌সে প্রচ‌লিত বিশ্বাস ছিল। 

কিন্তুু এই প্রচ‌লিত ধারনা ভুল ও কেন ভুল তার বৈজ্ঞা‌নিক ব্যাখ্যা দি‌তে শুরু ক‌রেন স‌ক্রে‌টিস। গ্রি‌সের তরুন সমাজ স‌ক্রে‌টি‌সের নতুন দর্শ‌নের প্র‌তি অাসক্ত হ‌য়ে প‌ড়েন।

গ্রি‌সের শ্বাসক‌শ্রেণী বিষয়‌টি ভালভা‌বে নেন‌নি এবং সরকার সম‌র্থিত এথে‌ন্সের ৩ জন বি‌শিষ্ট নাগ‌রিক‌ মে‌লেতুল,লাইকন ও অনাতুস কে অ‌ভি‌যোগকারী ক‌রে স‌ক্রে‌টি‌সের বিরু‌দ্ধে অ‌ভি‌যোগ করান।- মে‌লেতুল ছি‌লেন এথে‌ন্সের একজন ক‌বি, লাইকন ছি‌লেন বক্তা ও অনাতুস ছি‌লেন একজন রাজ‌নৈ‌তিক।

--------------------------------------->চলমান..

লেখক: চৌধুরী তৌ‌হিদুর রহমান তুষার

LL.M, এ্যাড‌ভো‌কেট, বাংলা‌দেশ স‌প্রিম কোর্ট ও জজকোর্ট, খুলনা।

যোগাযোগ: 

Cell- 01715 552122,

e-mail- advctushar@gmail.com

#ক্রসফায়ার

Post a Comment

0 Comments