সোনাদিয়ার ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ আর কতদূর??
লেখক....Md Repaj Uddin
সারা দেশে মোট ৪ হাজার ৫৭১টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ১৯৯৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত মোট ১ হাজার ৪৮৭টি পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এ পর্যায়ে এর প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল ৭৫৫ দশমিক ৬৮ কোটি টাকা। দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০১২ থেকে ২০১৯ সালে ৯০৫ দশমিক ৬০ কোটি ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ৭৫৬টি ভবন এবং প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে জুন ২০২০ করায় আরও নির্মাণাধীন রয়েছে ২৭৫টি ভবন। তৃতীয় পর্যায়ে ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৪ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১ হাজার ১৩৩টি ভবন নির্মাণের প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে জেলা পরিষদসহ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকল্প থেকে নির্মাণ করা হয়েছে ৯৫৫টি।
তৎকালীন সোনাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব মোজ্জামেল হোসেন এর ইউনিয়ন পরিষদের ভবন নির্মাণের তৎপরতা এখনও চোখে লেগে আছে যদিও তখন অনেক ছোট ছিলাম এত কিছু বুঝতাম না। পরবর্তীতে সাবেক দুই চেয়ারম্যান জনাব আহসান উল্ল্যাহ বাহার ও জনাব ইয়াছিন আরাফাতদের তৎপরতাও দেখেছি এবং সফল না হওয়ার চিত্র বর্তমান।বর্তমান চেয়ারম্যানও চেষ্টা করছেন যদিও দ্বিতীয় পর্যায়ের মেয়াদ শেষ। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে সারাদেশে এত ভবন নির্মিত হল এমনকি হাতিয়ার প্রায় সকল ইউনিয়নেও ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মিত হয়েছে। বয়ারচর ও নলের চর ইউনিয়ন এর মর্যাদা এখনও পায়নি সীমানা নির্ধারণজনিত জটিলতার কারনে তারপরেও সেখানে ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন আছে!! তবুও কেন সোনাদিয়ার এই দৈন্যদশা?? এই দৈন্যতা কী সোনাদিয়াবাসীর নাকি চেয়ারম্যানদের?? সরকারি টাকায় একটি ভবন নির্মাণের মত একটি সস্তা কাজ যদি আমাদের চেয়ারম্যানরা যদি না করতে পারেন তাহলে প্রায় লক্ষ জনগোষ্ঠীর দায় দায়িত্ব কিভাবে পালন করছেন সকলে দেখছেন।
আমি যেটুকু জানি ভবন নির্মাণ এর জন্য স্হান নির্বাচনজনিত জটিলতার কারনে ভবনটি আলোর মুখ দেখছেনা। সকলে চাই তার ঘরের দরজায় ভবনটি নির্মাণ করতে নীতিমালার তোয়াক্কা না করে!! প্রায় সকলে অভিযোগ করছে জমি নাই, বরাদ্দের টাকা কম (এলজিইডিতে ভবন নির্মাণ এর জন্য বরাদ্দের পরিপত্রটি দেখতে পারেন)! বর্তমানে জমি দিবে বলে বর্তমান চেয়ারম্যান এর নিকট সমাজ কমিটি গেলেও তিনি কোন এক অদৃশ্য কারনে চেয়ারম্যান সাহেব চুপ এবং এই চুপ থাকতে থাকতেই ইতোমধ্যে প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের মেয়াদ শেষ!! আর টাকার অভিযোগটি ভিত্তিহীন, উপরের পরিসংখ্যান দেখেন, সেখানে বলা আছে ভবন নির্মাণে সরকার প্রায় ২ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছেন!!
বর্তমানে সমাজ কমিটি যে স্হানের প্রস্তাব দিয়েছে তা নীতিমালা কোন শর্ত ভংগ করেনা এবং টাকারও কোন সমস্যা নেই প্রকল্পের ও পরিপত্রের তথ্যনুযায়ী। নীতিমালার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হল পরিষদের নামে নূন্যতম ২৫ শতাংশ ভূমি থাকতে হবে এবং উক্ত ভূমিটি এমন জায়গায় থাকতে হবে যেটি ইউনিয়নের কেন্দ্র বিন্দুতে অবস্হিত। ইউনিয়নের যেকোন স্হান থেকে যে কেউ সহজে যেন আসতে পারে, ভবনের পাশে রাস্হা, স্কুল, বাজার, হাসপাতাল ইত্যাদি যেন থাকে (পরিপত্রটি সংযুক্ত করা হল)।
এই ভবনের অভাবে সোনাদিয়া ইউনিয়নের দাপ্তরিক, নাগরিক ও ডিজিটাল সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সোনাদিয়াবাসী সহজে ইউনিয়ন পরিষদের সেবা নিতে পারছেনা। দেখা যাচ্ছে এই ভবনের অভাবে সোনাদিয়াবাসী কোন মেম্বার কিংবা চেয়ারম্যানের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছে! সরকারি সেবা কোন মেম্বার কিংবা চেয়ারম্যান এর বাড়ি থেকে দেওয়ার বিধান নেই! আমরা এমন খামখেয়ালি দশার মুক্তি চাই এবং সরকারের নেওয়া ওয়ান স্টপ সার্ভিস চাই স্হায়ী ভবন থেকে। সামনে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন আমরা নিশ্চয়ই পরিষদ ভবন নির্মাণের মুলা ঝুলানো প্রতিশ্রুতি শুনব!! আমরা ক্লান্ত নাগরিক এমন প্রতিশ্রুতি শুনতে চাইনা তার বাস্তবায়ন চাই। পরিশেষে বলব এই হয়রানির শিকার হচ্ছে সোনাদিয়ার সকলে সুতরাং এটা নিয়ে আর নোংরামী না, নীতিমালা অনুয়ায়ী ভবন নির্মাণের পদক্ষেপ নিন এবং শুভ বুদ্ধির পরিচয় দিন।।
তথ্যসূত্রঃ এলজিইডি ও বাংলাদেশ তথ্য বাতায়ন।
0 Comments